আনোয়ারা প্রতিনিধি: চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায় রাঙ্গাদিয়ায় অবস্থিত ডিএপি (ডাই অ্যামোনিয়া ফসফেট) সার কারখানার বিষাক্ত বর্জ্য মিশ্রিত পানি পান করে আবারও ১২টি গরু-মহিষের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীরা জড়ো হয়ে মরা গরু-মহিষগুলো নিয়ে রাষ্ট্রয়াত্ব সার কারখানা চিটাগং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেডে (সিইউএফএল) ভিতরে অবস্থিত ডিএপি সার কারখানার সামনে গতকাল সন্ধ্যায় ও রাতে বিক্ষোভ করেন।তাঁরা কারখানা কর্তৃপক্ষের কাছে ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন।
এর আগে বিভিন্ন সময় বর্জ্যের কারণে চট্টগ্রাম ইউরিয়া কারখানা লিমিটেডের (সিইউএফএল) বিরুদ্ধে পশুর মৃত্যুর অভিযোগ উঠলেও এবারই মৃত্যুর কারণ। প্রথম অভিযোগ এল ডিএপি সার কারখানার বিরুদ্ধে। তবে কারখানা কর্তৃপক্ষ সরাসরি অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
বর্জ্যে মো. ইব্রাহিমের একটি,মো. এরফানের একটি, আবুল কাশেমের তিনটি, জওহর লাল সিংহের একটি, মো. সৈয়দ জামালের একটি, মো. একরামের দুটি, মো. জাকের হোসেনের একটি, মো. কামাল হোসেনের একটি ও মো. পারভেজের একটি গরুসহ ১২টি মহিষ-গরু মারা যায়। ক্ষতিগ্রস্ত লোকজনের বাড়ি আনোয়ারা উপজেলার বারশত ইউনিয়নের গোবাদিয়া ও রাঙ্গাদিয়া এলাকায়।
ক্ষতিগ্রস্ত লোকজন জানান, বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে আনোয়ারা উপজেলার ডিএপি সার কারখানার পেছনে খালের পানি খেয়ে মহিষ ও গরু মারা যেতে শুরু করে। রাতের বেলা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা মারা যাওয়া পশু ডিএপি সার কারখানার গেটে এনে বিক্ষোভ শুরু করেন। ওই সময় স্থানীয় লোকজনের দাবির মুখে ডিএপি সার কারখানার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে একটি মহিষ ও একটি গরুর ময়নাতদন্ত করে নমুনা সংগ্রহ করেন।
স্থানীয় বারশত ইউপি চেয়ারম্যান এম এ কাইয়ুম শাহ আজকের দর্পন পত্রিকাকে জানান, সার কারখানার বিষাক্ত বর্জ্যের মিশ্রিত পানি গ্রামের খাল দিয়ে প্রবাহিত হয়। প্রায় সময় এসব বিষাক্ত পানি খেয়ে গাবাদি পশুর মৃত্যু হয়।’ডিএপি সার কারখানার বিষাক্ত বর্জ্যে এলাকার ১২টি গরু-মহিষ মারা গেছে। সার কারখানা কর্তৃপক্ষের পরামর্শে পশুর ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। সার কারখানার বর্জ্যে মারা গেলে ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেবে বলে আমাকে আশ্বস্ত করেছে।
সিইউএফএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মিজানুর রহমান জানান, সিইউএফএল প্রায় তিন মাস ধরে বন্ধ। কারখানা এখন উৎপাদনে নেই। তাই আমাদের বিষাক্ত পানি বের হওয়ার প্রশ্নই উঠে না।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের ভেটেরিনারি সার্জন ডা. শ্যামল চন্দ্র দাশ বলেন, ‘আমরা একটি মহিষ ও একটি গরুর ময়নাতদন্ত করেছি, দু-এক দিনের মধ্যে প্রতিবেদন পেলে বলা যাবে পশুগুলোর মৃত্যুর কারণ।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ৬ মে বারশত ইউনিয়নের মাঝেরচর গ্রামে কারখানার বজ্রমিশ্রিত পানি খেয়ে ১২টি মহিষ মারা যায়। ২০২২ সালের ১৩ এপ্রিল মারা যায় ১৩টি মহিষ।
leave your comments