রাউজান (চট্টগ্রাম) সংবাদদাতা : রাউজানের সাবেক সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীসহ ২৭ দলীয় নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে। উপজেলার পশ্চিম গুজরা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. সিরাজদৌল্লাহ অপহরণের পর মুক্তিপণ আদায় করে অস্ত্র দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগে মামলাটি করেছেন। মামলায় আরো ২৭ জনকে আসামি করা হয়েছে। আদালত মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
সোমবার (১৯ আগস্ট) সকালে চট্টগ্রাম চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি করেন সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজদৌল্লাহ। মামলায় চট্টগ্রাম-৬ (রাউজান) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীকে প্রধান আসামি করে মোট ২৭ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ৫ থেকে ৬ জনকে আসামি করা হয়েছে। আসামিরা সবাই রাউজান উপজেলার বাসিন্দা।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০২২ সালের ১১ সেপ্টেম্বর রাত ৮টার দিকে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান তাঁর পরিচিত এমদাদের ভাগ্নির বাড়িতে দাওয়াতে যান। সেখানে সন্ত্রাসীরা তাকে আটকের চেষ্টা করলে জানতে পেরে দ্রুত বাড়িতে চলে আসেন।
পরদিন সকাল ১১টায় তাঁকে সাবেক সংসদ সদস্যের নির্দেশে অন্যান্য আসামিরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে বাড়িতে প্রবেশ করে হত্যার চেষ্টা চালায়। তাকে বাঁচাতে স্ত্রী-কন্যা এগিয়ে আসলে তাদেরকেও লাঞ্ছিত করে। আসামি মো. মাসুদ তাদের আলমারির তালা ভেঙে ৭ ভরি স্বর্ণালংকার এবং আসামি লিটন দে ১৫ হাজার টাকা লুট করে৷ এছাড়া বাড়ির মূল্যবান আসবাব ভাঙচুর করে চার লক্ষ টাকার ক্ষতি করে।
একই সময় ইউপি চেয়ারম্যানকে অপহরণ করে হত্যার উদ্দেশ্যে ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইসলামাবাদ সাকিনের নুরুল আমিন চেয়ারম্যানের বাড়ির পেছনে একটি টিনশেড ঘরে আটকে রাখে। এরপর তার মাথার চুল ও মুখের দাঁড়ি ফেলে বিবস্ত্র করে ছবি তুলে সাবেক সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীকে দেখানো হয়। এরপর সেই ছবি ফেসবুকে প্রচার করা হয়।
এছাড়া আসামি টনি বড়ুয়া মৃত্যুর হুমকি দিয়ে ৬ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। পরে তার ভাই তিন লাখ টাকা এনে টনির হাতে তুলে দেয়। রাত ৮টার দিকে বাদীকে আসামি শাহাবুদ্দিন আরিফের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর একটি সিএনজিতে বসিয়ে আসামি লিটন দে পুরাতন একটি অস্ত্র আসামি আনোয়ার একটি গুলি এনে ওই সিএনজির পেছনে রাখে। এরপর রাউজান থানার উপপরিদর্শক অজয় দেবনাথ এবং ইলিয়াছ বাদীকে আরেকটি সিএনজি অটোরিকশায় করে থানায় নিয়ে যায়। এসআই অজয় দেবনাথ বাদীকে দিয়ে তার স্ত্রীর কাছে ফোন করিয়ে ১০ হাজার টাকা আদায় করেন। পরে একইবছরের ১৩ সেপ্টেম্বর সকাল ১১টায় রাউজান থানায় অস্ত্রসহ ছবি তুলে অস্ত্র আইনে একটি মামলা রুজু করে বাদীকে আদালতে পাঠানো হয়।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদীর আইনজীবী এডভোকেট সোহাইল লুৎফুল হাসনাত। তিনি বলেন, ‘সাবেক চেয়ারম্যান সিরাজদৌল্লাহকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ে অভিযোগে একটি মামলা হয়েছে। মামলায় রাউজানের সাবেক এমপি ফজলে করিমসহ ২৭ জনের নাম উল্লেখ করে আসামি করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আদালত মামলার আবেদন আমলে নিয়ে পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।’
leave your comments