বিশেষ প্রতিনিধিঃ
চন্দনাইশ উপজেলার বরকল এলাকায় চলতি বোরো মৌসুমে প্রায় ৫’শ একর জমিতে সেচের অভাবে চাষাবাদ না হওয়ায় কৃষকদের মাঝে চরম উত্তেজনা ও ক্ষোভ বিরাজ করছে। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এসময় তিনি উপস্থিত কৃষকদের আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণের প্রতিশ্রুতি দেন। ২১ ফেব্রুয়ারি বিকেলে বরকল ইউনিয়ন পরিষদের পশ্চিম পার্শ্বে বরকল বিল ও পূর্ব পাশে সুচিয়া বিলের প্রায় ৫’শ একর জমিতে চাষাবাদ না হওয়ায় সহস্রাধিক কৃষকদের মাঝে ক্ষোভের সঞ্চার সৃষ্টি এবং জমায়েত হয়। এসময় শত শত কৃষক ইউনিয়ন পরিষদের সামনে এসে খালে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারী ওয়াল ভাঙ্গার পরিকল্পনা গ্রহণ করার খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহামুদা বেগম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। স্থানীয় চেয়ারম্যান আবদুর রহিম চৌধুরী বলেছেন, ১৯৬৬ সালে বর্তমান ইউনিয়ন পরিষদের দক্ষিণ পাশ থেকে ইউ আকৃতির হয়ে হাম্মন খাল (বোর্ড খাল) খনন করে তৎকালীন গভর্নর মোনায়েম খান উদ্বোধন করেন। যা চানখালী খালের সাথে সংযুক্ত করা হয়। ১৯৯১ সালে তৎসময়ে ১৬ লক্ষ টাকা ব্যয়ে বিএডিসি কর্তৃক পাম্প হাউজ স্থাপন করে চাষাবাদের জন্য উম্মুক্ত করে দেন। যা এখনো বহমান রয়েছে। ১৯৪৯ সালে বরকল ইউনিয়ন পরিষদ স্থাপন করা হয়। ইউনিয়ন পরিষদের পাশে জনৈক রফিকুল ইসলাম ২০১২ সালে জমি ক্রয় করে গত কিছুদিন পূর্বে খালের চলাচলের পানি বন্ধ করলে কৃষকদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয় এবং চলতি মৌসুমে পুরোদমে চাষাবাদ ব্যাহত হচ্ছে। স্কীম ম্যানেজার মাসুদুর রহমান বলেছেন, ৭০ বছর ধরে তার পিতা ছালেহ আহমদ, পরবর্তী তার পিতার মৃত্যুর পর তার ভাই নাসির এবং ১৯৯১ সাল থেকে সে নিজেই স্কীম বসিয়ে চাষাবাদের জন্য পানি সরবরাহ করছেন। কিন্তু চলতি মৌসুমে স্কীম বসানোর ঘরটি ভেঙ্গে খালে ও রাস্তার পাশে ওয়াল দেয়ায় এবছর স্কীম বসাতে পারেন নাই এবং চাষাবাদ হচ্ছেনা। এব্যাপারে পার্শ্ববর্তী জমির মালিক রফিকুল ইসলাম বলেছেন, খালটি চোখে দেখা গেলেও আরএস বিএস খতিয়ানে খালের কোন অস্তিত্ব নাই। তার সাথে স্কীম ম্যানেজারের ভাড়াটিয়া হিসেবে চুক্তি রয়েছে। সে স্থানীয় চেয়ারম্যানের বসে গিয়ে এবছর স্কীম বসাইনি এবং চাষাবাদ হচ্ছেনা। তিনি তার নিজের ক্রয়কৃত জায়গায় ওয়াল নির্মাণ করেছেন, কোন খালে নয়। কৃষক রেজিয়া বেগম বলেছেন, তার স্বামী নেই। এক কানি জমি রয়েছে, চলতি মৌসুমে চাষাবাদ না হওয়ায় তিনি এবছর ছেলে মেয়েদের নিয়ে না থাকতে হবে। কৃষক মৃদুল কান্তি দে বলেছেন, সে সুচিয়া বিলের বর্গা চাষি। চলতি মৌসুমে চাষাবাদ না হওয়ায় তিনি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। এব্যাপারে তারা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
leave your comments