মো.আমজাদ হোসেন, আনোয়ারা (চট্টগ্রাম)প্রতিনিধি :
দেড় বছর হল ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হয়ে বাবা মারা গেছে। তাতে কি! জীবন তো আর থেমে থাকে না। অভাবের সংসার। তাই জীবিকার তাগিদে অটোরিকশা চালায় শিশু আকিব। কোমল হাতে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা নিয়ন্ত্রণ করেই চলছে তার বেঁচে থাকার লড়াই।
কিশোর মোহাম্মদ আকিব। বয়স সবেমাত্র ১৪-১৫। এ বয়সে বই-খাতা নিয়ে বিদ্যালয়ে যাওয়ার কথা। বন্ধুদের সঙ্গে খেলাধুলা করার কথা। কিন্তু দারিদ্র্যের কশাঘাতে সেটি তার বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। গত দেড় বছর আগে তার বাবা মারা যায়।বেঁচে থাকার চেষ্টায় অটোরিকশা চালিয়ে সংসারের হাল ধরতে হয়েছে কিশোর মোহাম্মদ আকিবকে।
মোহাম্মদ আকিব আনোয়ারা উপজেলার পরৈকোড়া ইউনিয়নের ওষখাইন মধ্যম পাড়ার মরহুম মো.আলী’র ছেলে।সে ওষখাইন শাহ্ আলী রজা রহঃ আলীম মাদ্রাসার সপ্তম শ্রেণীর শিক্ষার্থী। তারা ৩বোন ১ভাই।কিন্তু তার জীবন আরও ১০ জন শিশুশিক্ষার্থীর মতো । মাত্র ১৫ বছর হলেও মা-বোন পরিবার চালাতে লেখাপড়া ছেড়ে আকিবকে বেছে নিতে হয়েছে উপার্জনের পথ।
আকিবের বয়সী অন্য যারা আছে তারা হয়তো মগ্ন আছে লেখাপড়া আর খেলাধুলা নিয়ে। আর আকিব এই বয়সেই পুরো সংসারের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছে। লেখাপড়া আর খেলাধুলায় কী আনন্দ, তা জানা নেই আকিবের। এসব ভুলে পরিবারের পেটে খাবার তুলে দিতেই সারাদিন পরিশ্রম করে যাচ্ছে আকিব।
মো.আকিব জানায়,১বছর আগে থেকেই আমি অটোরিকশা চালায়। তখন তার বয়স মাত্র ১৩ বছর। আমার কপালে লেখাপড়া নেয়।পেটের দায়ে অটোরিকশা চালাতে হচ্ছে,আমি একদিন অটোরিকশা নিয়ে বের না হলে পরিবারে হিমশিম খেতে হয়।
আকিবের মা নাছমিন আক্তার জানান, আকিবের বাবা দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিল,নিজেদের শেষ সম্বলটুকু দিয়ে চিকিৎসা করিয়েও সুস্থ করে তুলতে পারি নি।গত দেড় বছর পূর্বে তার বাবা মারা যায়।তাই দু’বেলা দু’মুঠো খাবারের ব্যবস্থা করতে রাস্তায় অটোরিকশা নিয়ে নামতে হয়েছে শিশু আকিবকে। কিন্তু এইটুকু বাচ্চার উপার্জনে কি সংসার চলে?
স্থানীয় ব্যবসায়ী ইমরান বলেন, ১৪ বছরের একটি শিশুর পক্ষে পরিবার চালানোর দায়িত্ব বহন করাটা অমানবিক। এই পরিবারের জন্য সরকারিভাবে সহায়তার ব্যবস্থা প্রয়োজন। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা অবশ্য এই পরিবারের দুর্দশা সম্পর্কে অবহিত নন বলেই জানালেন।
পরৈকোড়া ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ওয়ারেছ আহম্মেদ আজকের দর্পন পত্রিকাকে বলেন,পরিবারটি সম্পর্কে জানা নেই। তাদের কেউ আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। যোগাযোগ করলে সহযোগিতার ব্যবস্থা করা হবে।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আজিজুল হক চৌধুরী বাবুল সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
leave your comments